• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ যশোরের বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে ঢাকা ভাটারা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬, যশোর ও র‌্যাব-১ গোপালগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ’কে পটুয়াখালী হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬ Mostbet App Download For Android Apk And Ios 2023 Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই

দুধ-ডিম-মাংসের ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে মধ্যবিত্তের লাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক : গৃহপরিচারিকার কাজ করেন ফিরোজা বেগম। পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লার মোড় এলাকায় ছেলেকে নিয়ে থাকেন তিনি। কোনো মতে মা-ছেলের সংসার চলে। এরইমধ্যে এবারের রমজান শুরুর আগে থেকেই ভোজ্যতেলের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। এর প্রভাব পড়েছে ফিরোজার পরিবারেও। তাই টিসিবির পণ্য কিংবা সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো পণ্য কমমূল্যে বিক্রি হলেই তা কিনতে লাইন ধরেন ফিরোজা।
রাজধানীতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে বিক্রি হচ্ছে দুধ, ডিম ও মাংস। পুরান ঢাকার আজিমপুর মাতৃসদনের সামনে এসব পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে জেনে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে চলে আসেন ফিরোজা। গরুর মাংস কেনার উদ্দেশ্যে এলেও তার আগেই শেষ হয়ে যায় তা। ফলে অনেকটা কষ্ট নিয়েই ফিরতে হয় ফিরোজাকে। শুধু তিন হালি ডিম কিনে ফিরে যান তিনি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জীবন চলা অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠেছে। টিসিবির পণ্য কিনতে তাই থাকে দীর্ঘ লাইন। অনেকে আবার ট্রাকের পেছনে দৌড়াতে থাকেন নায্যমূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়ার আশায়। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীতে রমজানের প্রথম দিন থেকেই সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে পাস্তুরিত তরল দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা ও ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আজিমপুর মাতৃসদন, নয়াবাজার, সচিবালয় সংলগ্ন আবদুল গণি রোড, সেগুনবাগিচা, খামারবাড়ি গোল চত্বর, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আরামবাগ, নতুনবাজার, কালশী, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, নাখালপাড়ার লুকাস মোড় ও উত্তরার দিয়াবাড়িসহ মোট ১৫টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। প্রতিটি গাড়িতে দুধ, ডিম ও মাংসের সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২৮ রমজান পর্যন্ত চলবে এই পণ্য বিক্রি।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ির সামনে কোনোটাই লাইন, আবার কোনোটায় বেলা ১২টা নাগাদই পণ্য বিক্রি প্রায় শেষ। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়।
পুরান ঢাকার আজিমপুর মাতৃসদনের সামনে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন পণ্য ক্রয়ের জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে কুপন নিতে অপেক্ষা করছেন। বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে এসব পণ্য পাচ্ছেন তারা। কেন্দ্রটিতে সকালে গাড়ি আসার আগেই অনেকেই লাইনে দাঁড়ান বলে জানা যায়। বিক্রয় কর্মী মো. আজিজুর রহমান বলেন, সকালে লাইন ছিল। আমাদের এখানে ১০০ কেজি গরুর মাংস ছিল, এক ঘণ্টার মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। খাসির মাংসও ২০ কেজি ছিল, এটাও শেষ। দুধ ২২০ লিটার, ডিম এক হাজার ২০০টি, মুরগি ৪৫ কেজি- এই সবগুলো পণ্যই দুপুরের আগেই শেষ হয়ে যাবে।
এসময় লালবাগ থেকে পণ্য কিনতে আসা এসকে রুপার সঙ্গে কথা হয়। শুক্রবার ছুটির দিনে বাজার করতে বের হয়েছেন তিনি। বাজার থেকে কিছু পণ্য কিনে রিকশা দিয়ে যাওয়ার পথে মন্ত্রণালয়ের গাড়ি দেখে থামেন তিনি। বাজার মূল্য থেকে কম দামে বিক্রি হওয়ায় প্রয়োজনীয় কিছু পণ্য কেনেন তিনি। এসময় এসকে রুপা বলেন, বাজারে সব জিনিসের দামই বেশি। এখানে দামটা কম তাই কিনতে আসলাম। এমন আরও বিভিন্ন জায়গায় হলে ভালো হতো। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আরও কয়েকটি পণ্য বাড়ানো উচিত।
শুধুমাত্র নিম্ন বা মধ্য আয়ের মানুষই নয়, সরকারি চাকরি করেন এমন মানুষও পণ্য কিনছেন ভ্রাম্যমান এসব গাড়ি থেকে। সরকারি চাকরি করেন মো. আবু হানিফ। নিত্যপণ্যের বর্তমান ঊর্ধ্বগতিতে যৌথ পরিবারের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। হানিফ বলেন, বাজারে সবকিছুরই দাম বেশি। এখানে কয়েকটি পণ্য একটু কম দামে পাওয়া যায়। বড় সংসার, তাই এক সঙ্গে ১০ কেজি দুধ কিনে নিলাম। সঙ্গে এক ডজন ডিম কিনেছি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি গাড়ি থেকে পণ্য ক্রয় করেন ১০০ থেকে ২০০ জন। রাজধানীজুড়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের মধ্যে মাত্র তিন থেকে চার হাজার মানুষ ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে পণ্য কিনতে পারেন।
ভ্রাম্যমাণ গাড়ির পণ্য বিক্রির তদারকিতে থাকা ড. বিবেক চন্দ্র রায় বলেন, করোনাকালে ঢাকার বাইরে প্রথমে আমাদের এই কার্যক্রম শুরু হয়। ঢাকাতে এবারই প্রথম শুরু হয়েছে। মানুষ যেন কম মূল্যে পণ্য পায়, আর ব্যবসায়ীরাও যেন চাইলেই বেশি দাম বাড়াতে না পারে- এই উদ্দেশ্যে আমাদের এ প্রচেষ্টা। মন্ত্রী ও সচিব মহোদয় আন্তরিক হয়ে এই কার্যক্রম শুরু করেছেন। তবে সরবরাহের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ আসছেন পণ্য কিনতে। আজ ছুটির দিনে লোকজন কিছুটা কম। তারপরও দুপুরের আগেই সব বিক্রি হয়ে গেছে। আমাদের পণ্যগুলো মানসম্মত। আগামী রমজানে এই কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করতে পারবো বলে আশা করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.